আঁধার ঘেরা আলো
অমার নিকষ কালো অন্ধকারে শ্যামা মায়ের আগমন। মা আসতেই চতুর্দিক আলোয় আলোকিত। আমরা প্রদীপ জ্বালিয়ে কামনা করি, ‘অসতো মা সদ্গময়’ – আমাদের অসৎ থেকে সৎ-এ নিয়ে চলো। আমাদের মনের অন্ধকার দূর হোক। আলোকের এই ঝর্ণাধারায়, আলোর উৎসবে গাইতে ইচ্ছা করে, ‘এই যে আলো সূর্য গ্রহে তারায় তারায় ঝ’রে পড়ে শত লক্ষ ধারায়, পূর্ণ হবে এ প্রাণ যখন ভরবে।’
দিগ্বসনা, খড়্গধারিনী, মুন্ডমালিনী শ্যামা মায়ের অপরূপ জ্যোতিতে নাশ হয় অন্ধকার। তবু কখনো আঁধার ঘিরে থাকে আলো। জগজ্জননী মা তোমার অমোঘ অস্ত্রে নিধন কর সেইসব অসুরদের যারা অন্ধকারের হাহাকার জিইয়ে রাখতে চায়, যারা উজ্জ্বল আলোর পথে বিঘ্ন সৃষ্টি করে। অন্ধকারের আবিলতায়, নৈরাজ্যের ব্যাপকতায় হাঁপিয়ে উঠে যৌবন। কুক্ষিগত আলোর উৎস সন্ধানে এসব ব্রাত্যজনের সংগ্রাম আমরণ। ‘চিরদিন কাহারো সমান নাহি যায়’। তাই এরা অনিমেষ নয়নে চেয়ে আছে, কখন অন্ধকার চুরমার হয়ে দিগন্ত উদ্ভাসিত হবে আলোয়। হে দেবী! আমাদের অন্তরের শুভ্র আলোর ঔজ্জ্বল্যে নিপাত যাক অন্ধকার প্রশ্রয়ী অনৃত। আঁধার ঘেরা আলো ছিনিয়ে আনতে, আলোকপ্রত্যাশী মনের আর্তি কবিগুরুর ভাষায় বলি –
‘সেদিনে ধন্য হবে তারার মালা
তোমার এই লোকে লোকে প্রদীপ জ্বালা,
আমার এই আঁধারটুকু ঘুঁচলে পরে।’